বিশ্ব জুড়ে কম্পিউটারে সাইবার আক্রমন দেখা যাচ্ছে খুব। অনেকে আবার এটাকে ‘সাইবার রোগ’-এর উপদ্রব দেখা যাচ্ছে বলেও আখ্যা দিয়েছেন। ‘র্যানসমওয়্যার’ নামের এই ম্যালওয়্যার ভাইরাসটি ২০১৪ সালে প্রথম ধরা পড়ে। গত দুই বছরে এই র্যানসমওয়্যার ভাইরাসের মাধ্যমে সাইবার দুর্বৃত্তরা প্রায় আড়াই কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় ২০০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে।
প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান গুগল আর এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয় ২৭ জুলাই বিবিসি নিউজে। ম্যালওয়্যার মূলত কম্পিউটারের ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অগোচরেই কম্পিউটার নেটওয়ার্কে আক্রমণ করে তথ্য বা ডেটা চুরি কিংবা কম্পিউটারের ক্ষতি করতে পারে সাইবার দুর্বৃত্তরা। র্যানসমওয়্যার হচ্ছে এমনই একধরনের ম্যালওয়্যার, যা কম্পিউটারের দখল নিয়ে ব্যবহারকারীকে তা পুনরায় ফিরে পেতে অর্থ পরিশোধে বাধ্য করা হয়। গত দুই বছরে বেশ বড় বড় র্যানসমওয়্যার হামলা হয় সারা বিশ্বেই। গত মে মাসেই বিশ্বের প্রায় ৭৪টি দেশে একযোগে র্যানসমওয়্যার হামলা হয়। বাংলাদেশেরও বেশ কয়েকটি কম্পিউটার এই হামলার শিকার হয়। গুগল তাদের করা এক জরিপে বলে, লোকি ও সারবার ম্যালওয়্যার ভাইরাসের মাধ্যমেই প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে সাইবার দুর্বৃত্তরা। শুধু এ বছরেই লোকি প্রায় ৮০ লাখ ও সারবার ৭০ লাখ মার্কিন ডলার আদায় করেছে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বলে জানানো হয় জরিপে। র্যানসমওয়্যার নিয়ে করা গুগলের জরিপের গবেষক এলি বারসটেইন বলেন, ‘র্যানসমওয়্যার মূলত কম্পিউটারের তথ্যে তালা লাগিয়ে দেয় আর চাবিটা হ্যাকারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। সেই তথ্যের মুক্তিপণ হিসেবে চাবিটা পেতেই হ্যাকারকে ই-অর্থ বা ‘বিটকয়েন’ পরিশোধ করতে হয়।’ বারসটেইন আরও বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফিশিং মেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন লিংক বা অ্যাটাচমেন্টে র্যানসমওয়্যার ধরনের ভাইরাস পাঠানো হয়। সেই লিংকে প্রবেশ করলেই কম্পিউটার র্যানসমওয়্যার ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফাইল খুলে দিতে ৩০০ থেকে ৫০০ মার্কিন ডলার দাবি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দেওয়ার ঘটনাই ঘটে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অর্থ পরিশোধ করা না হলে অর্থের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায় বলেও জানায় বারসটেইন।
সূত্র : বিবিসি নিউজ
No comments:
Post a Comment